আমাদের সম্পর্কে

সত্তর দশকের মধ্যভাগ থেকে বাংলাদেশীরা জীবিকার অন্বেষণে পরিবার-পরিজন এবং প্রিয়জন রেখে জন্মভূমি থেকে পাড়ি জমান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। জাপানে বাংলাদেশীরা ব্যাপক হারে আগমণ করেন আশির দশকে। জাপানে আসার পর, প্রবাসীরা শুরু করেন নানা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড। সে সময় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন গড়ে উঠলেও সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অভাবে অধিকাংশ সংগঠন বিলীন হয়ে যায়। বৃহত্তর খুলনা একটি বিশাল জনপদ অথচ দেশের সবচেয়ে অবহেলিত অঞ্চল। এ অঞ্চলে রয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি, বাউল সম্রাট লালন শাহের আখড়া, আধুনিক কবিতার জনক মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাসগৃহ। রয়েছে পৃথিবীর সপ্তম প্রাকৃতিক আশ্চর্যের অন্যতম সুন্দরবন। বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার নামে পরিচিত অথচ সেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের জন্মভূমি খুলনা এখনও বহির্বিশ্বে অজ্ঞাত। এই প্রেক্ষাপটে, বৃহত্তর খুলনার বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্য জাপান তথা সারাবিশ্বের কাছে তুলে ধরা এ অঞ্চলের জাপান প্রবাসীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়। অত্যন্ত দুঃখজনক যে ২০০৭ সালে সাইক্লোন সিডরের তান্ডবে সমগ্র দক্ষিনবঙ্গ প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের জাপান প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কোন ত্রাণকার্য সম্পাদন করতে পারেন নি। তবে তখন থেকেই বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের জাপান প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ধ হবার তাগিদ অনুভব করতে শুরু করেন। খুলনা অঞ্চলের জনগন ঘরমুখী ও শান্তি প্রিয়। তাঁরা দলাদলি ও অন্তর্কোন্দল পছন্দ করেন না বিধায় ইচ্ছা থাকলেও সহসা কেউ বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য উদ্যোগী হয়ে ওঠেন নি। তবে নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকলে বৃহত্তর খুলনা অঞ্চল আরো পিছিয়ে পড়বে, এই সত্য উপলদ্ধি করে কতিপয় উদ্যোক্তা খুলনা অঞ্চলের জাপান প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করতে এগিয়ে আসেন। বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের প্রবাসীদের নিয়ে একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠন গঠনের লক্ষ্যে ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর, টোকিওর ইকেবুকুরোতে একটি উন্মক্ত সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সভায় উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিক্রমে ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে ‘গ্রেটার খুলনা কমিউনিটি জাপান’ আত্মপ্রকাশ করে।